1) একটি গুপ্তবীজী উদ্ভিদের ফুলের সেই অংশগুলির নাম কর যেখানে পুং ও স্ত্রী লিংগধর গঠিত হয়।
উত্তরঃ গুপ্তবীজি উদ্ভিদে পুং লিংগধরের উৎপত্তি শুরুহয় পরাগধানীর পরাগথলিতে এবং সমাপ্ত হয় হয় ফুলের গর্ভমুণ্ড ও গর্ভদণ্ডে। অন্যদিকে স্ত্রী লিংগধরের উৎপত্তি ঘটে ডিম্বকের ভ্রূণপোষক কলায়।
2) মাইক্রো ও মেগাস্পোরোজেনেসিসের মধ্যে পার্থক্য নিরূপন কর। এই ঘটনাগুলো ঘটার সময় কোন ধরনের কোশ বিভাজন ঘটে? এই দুই ঘটনার শেষে সৃষ্ট গঠনগুলোর নাম লিখ।
উত্তরঃ
এই পদ্ধতি দুটি মিওসিস কোশ বিভাজনের মাধ্যমে ঘটে। স্ত্রীরেণুমাতৃকোশ (MMC) ও পুং রেণুমাতৃকোশ উভয়ই ডিপ্লয়েড (2n) এবং এগুলি থেকে হেপ্লয়েড (n) স্ত্রী ও পুংরেণু মিওসিসের দ্বারাই সৃষ্টি হয়।
মেগাস্পোরোজেনেসিসের দ্বারা স্ত্রী রেণুর উৎপত্তি ঘটে এবং মাইক্রোস্পোরোজেনেসিসের ফলে পুংরেণু সৃষ্টি হয়।
3) নিম্নলিখিত শব্দগুলোকে বিকাশের সঠিক ক্রম অনুসারে সাজাও- পরাগরেণু, রেণুধর কলা, রেণুচতুষ্টয়, পরাগরেণুমাতৃ কোশ, পুং গ্যামেট।
উত্তরঃ শব্দগুলোর বিকাশের সঠিক ক্রম নিম্নরূপ,
রেণুধর কলা, পরাগরেণু মাতৃকোশ (PMC), রেণুচতুষ্টয়, পরাগরেণু, পুং গ্যামেট।
4) একটি আদর্শ গুপ্তবীজী উদ্ভিদের ডিম্বকের পরিচ্ছন্ন চিত্র এঁকে বিভিন্ন অংশ দেখাও এবং এর গঠন বর্ণনা কর।
উত্তরঃ ডিম্বকত্বক দ্বারা আবৃত অপরিণত স্ত্রীরেণুস্থলীকে ডিম্বক (ovule) বলা হয়। নিষেকের পর ডিম্বক বীজে রূপান্তরিত হয়।
পরিণত ডিম্বক নিম্নোক্ত অংশগুলি নিয়ে গঠিত-
i) ডিম্বকবৃন্ত (funiculus)- যে দণ্ডকার অংশ ডিম্বককে অমরার সঙ্গে যুক্ত রাখে তাকে ডিম্বকবৃন্ত বলে।
ii) ডিম্বকনাভি ( hilum)- ডিম্বকের সঙ্গে ডিম্বকমূলের সংযোগস্থলকে হাইলাম বলে।
iii) ডিম্বকমূল (chalaza)- ডিম্বকের নিম্নভাগে অর্থাৎ যে জায়গা থেকে ডিম্বকত্বক সৃষ্টি হয় তাকে ডিম্বকমূল বলে।
iv) ভ্রূণপোষক কলা (nucellus)- ডিম্বকত্বক ডিম্বকের যে কলাকে আবৃত করে রাখে তাকে ভ্রূণপোষক কলা বলে।
v) ডিম্বকরন্ধ্র (micropile)- ডিম্বকত্বক ভ্রূণপোষক কলাকে সম্পূর্ণভাবে আবৃত করে না; সামনের দিকে একটি ছোট অংশ বাকি থাকে যাকে ডিম্বকরন্ধ্র বলা হয়।
vi) ভ্রূণস্থলী (embryo sac)- ভ্রূণপোষক কলার মধ্যে যে বড় আকৃতির থলির মত কোশ দেখা যায় তাকে ভ্রূণস্থলী বলে। এই ভ্রূণস্থলীতেই স্ত্রী গ্যামেট নিহিত থাকে।
5) স্ত্রীলিঙ্গধরের দেহের মনোস্পোরিক বিকাশ বলতে কী বোঝ?
উত্তরঃ বেশীরভাগ উদ্ভিদে স্ত্রী রেনুমাতৃকোশের মিওসিস বিভাজনের ফলে উৎপন্ন চারটি মেগাস্পোরের একটি কার্যকর থাকে বাকি তিনটি নষ্ট হয়ে যায়। পরবর্তীতে এই সক্রিয় স্ত্রীরেণুটি মাইটোসিস প্রক্রিয়ায় মোট তিনবার বিভাজিত হয়ে 8 নিউক্লিয়াস বিশিষ্ট ভ্রুনস্থলী বা স্ত্রী লিংগধরের উৎপত্তি ঘটায়। লিংগধরের এরকম বিকাশকে মনোস্পোরিক বিকাশ বলে।
6) একটি পরিচ্ছন্ন চিত্রের সাহায্যে স্ত্রীলিঙ্গধরের ৭-কোশীও এবং ৮- নিউক্লিয়াসবিশিষ্ট প্রকৃতি ব্যাখ্যা কর।
উত্তরঃ
7) চ্যাসমগ্যামাস (chasmogamous) ফুল কী? ক্লিস্টগ্যামাস ফুলে ইতর পরাগযোগ ঘটতে পারে কি? তোমার উত্তরের সপক্ষে কারণ দর্শাও।
উত্তরঃ যে সকল ফুল মুক্ত অবস্থায় থেকে অর্থাৎ যাদের গর্ভকেশর এবং পুংকেশর বাইরে উন্মুক্ত থাকে সে ধরনের ফুলকে চ্যাসমগ্যামাস বলে। যেমন- নয়নতারা (Catharanthus spp.), সন্ধামালতী (Mirabilis jalapa) ইত্যাদি।
ক্লিস্টগ্যামাস ফুলে ইতরপরাগযোগের সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। এই ধরণের ফুল বদ্ধ প্রকৃতির। এই প্রকারের অপ্রস্ফুটিত ফুলগুলিতে গর্ভকেশর ও পুংকেশর বাইরে উম্মুক্ত না থাকায় এদের মধ্যে ইতর পরাগযোগের বদলে স্বপরাগযোগ সংঘটিত হয়।
8) ফুলে স্ব-পরাগযোগ প্রতিরোধের দুটি কৌশল উল্লেখ কর।
উত্তরঃ স্ব-পরাগযোগের ফলে সৃষ্ট উদ্ভিদের জীবনীশক্তি ও তেজস্বীতা লোপ পায় এবং বংশধরদের অভিযোজন ক্ষমতারও ঘাটতি ঘটে। তাছাড়া এই পদ্ধতি বিবর্তন সহায়ক না হওয়ায় উদ্ভিদের মধ্যে স্ব-পরাগযোগের এড়িয়ে চলার জন্য বহু কৌশলের আবির্ভাব ঘটেছে। এগুলির উল্লেখযোগ্য দুটি পদ্ধতি হলো,
a) বিষম পরিণতি (Dichogamy)- উভয়লিঙ্গ ফুলে যদি একই সঙ্গে পুং ও স্ত্রী স্তবক পরিণতি লাভ না করে তাহলে স্ব-পরাগযোগ সংঘটিত হয় না যা বিষম পরিণতি নামে পরিচিত। ফুলে পুং-স্তবক স্ত্রী-স্তবকের আগে পরিণতি লাভ করলে তাকে প্রোট্যানড্রি এবং বিপরীত অবস্থাকে প্রটোগাইনি বলে। জবা, রক্তদ্রোণ ইত্যাদি উদ্ভিদে ডাইকোগ্যামি দেখা যায়।
b) অসমরূপতা (Heteromorphism)- উভয়লিঙ্গ ফুলে পুংকেশর ও গর্ভকেশর অসম দৈর্ঘ্যের হওয়ায় পরাগযোগ সম্ভব হয় না। পানমরিচ , আমরুল ইত্যাদিতে দেখা যায়।
9) স্ব-অসংগতি কী? স্ব-অসংগতিপূর্ণ প্রজাতিতে স্ব-পরাগযোগের ফলে বীজ গঠিত হয় না কেন?
উত্তরঃ পরাগরেণু ও গর্ভমুন্ডের আন্তঃক্রিয়ার ফলে যদি অবাঞ্ছিত পরাগরেণু অঙ্কুরিত না হয় তখন তাকে অসাযুজ্যতা বা অসংগতি বলা হয়। এই ঘটনাটিকে অনেকসময় যৌন- অসাযুজ্যতা বলা হয়। অসংগতি/অসাযুজ্যতা দুই প্রকারের আন্তঃ প্রজাতি- (এক্ষেত্রে একটি প্রজাতির পরাগরেণু অন্য প্রজাতির গর্ভমুন্ডে অঙ্কুরিত হয় না) এবং অন্তঃ প্রজাতি (যখন একই প্রজাতির পরাগরেণু সেই প্রজাতির অন্য ফুলের গর্ভমুন্ডে অঙ্কুরিত হয় না) । এই অন্তঃ প্রজাতি অসাযুজ্যতাকেই স্ব-অসংগতিও বলা হয়। এই পদ্ধতিটি জিন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত অন্তঃপ্রজনন প্রতিরোধী কৌশল।
যেহেতু স্ব-অসংগতিপূর্ণ প্রজাতিতে পরাগরেণু অঙ্কুরিতই হতে পারেনা তাই পুং গ্যামেট ও নিষেক কিছুই সম্পন্ন না হওয়ায় স্ব-পরাগযোগের ফলে বীজ গঠিত হয় না।
10) ব্যাগিং কৌশল কী? উদ্ভিদ প্রজনন কৌশলে এটি কিভাবে উপযোগী হয়?
উত্তরঃ ইমাসকুলেশনের (উদ্ভিদ প্রজননের উদ্দেশ্যে উভয়লিঙ্গ ফুল থেকে পুংস্তবকের অপসারণ) পর, পুং ও স্ত্রী ফুলকে পৃথক পৃথকভাবে প্লাস্টিক, মসলিন কাপড় বা কাগজের ছোট ছোট থলি অর্থাৎ মোড়ক দ্বারা ঢেকে রাখার পদ্ধতিকে ব্যাগিং কৌশল বলা হয়।
পুং ফুলগুলিকে দূষিত বস্তুর হাত থেকে রক্ষা এবং স্ত্রী ফুলগুলিকে অবাঞ্চিত পরাগযোগ থেকে রক্ষার জন্য ব্যাগিং পদ্ধতি উদ্ভিদ প্রজননে ব্যবহার করা হয়।
11) ট্রিপল ফিউশন কী? এটি কোথায় কীভাবে ঘটে? ট্রিপল ফিউশন প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণকারী নিউক্লিয়াসগুলির নাম উল্লেখ কর।
উত্তরঃ
12) একটি নিষিক্ত ডিম্বকে জাইগোটটি কেন কিছু সময়ের জন্য সুপ্তাবস্থায় থাকে বলে তোমরা মনে কর?
উত্তরঃ অনুকূল পরিবেশ বর্তমান থাকা সত্ত্বেও নির্দিষ্ট সময় অতিবাহিত না হওয়া পর্যন্ত বীজ/ভ্রূণ অঙ্কুরিত হয় না। এই নির্দিষ্ট সময় কালকে বীজের সুপ্তাবস্থা (dormancy) বলে। সুপ্তাবস্থায় জন্য বিভিন্ন কারণ দায়ী যথা-
ক) বীজের ভ্রূণটির অপরিপুষ্ট থাকা।
খ) বীজত্বক জল অভেদ্য থাকায় বীজে জলের প্রবেশ না করতে পারা।
গ) সুপ্তাবস্থা ভঙ্গক হরমোনের ঘাটতি।
13) পার্থক্য নিরূপন কর,
ক) বিজপত্রাবকান্ড ও বীজপত্রাধিকান্ড
খ) ভ্রূণমুকুলাবরণী ও ভ্রূণমুলাবরণী
গ) ডিম্বকত্বক ও বীজবহিঃত্বক (testa)
ঘ) পেরিস্পার্ম ও পেরিকার্প
উত্তরঃ
14) আপেলকে অপ্রকৃত ফল বলে কেন? ফুলের কোন অংশটি বা অংশগুলো থেকে ফল গঠিত হয়?
উত্তরঃ ফুলের ডিম্বাশয় ফলে রূপান্তরিত হলে সেই ফলকে প্রকৃত ফল বলা হয়। আপেলের ক্ষেত্রে ফুলের পুষ্পাক্ষ পরিবর্তিত ও বিবর্ধিত হয়ে ফল সৃষ্টি হয় বলে তাকে অপ্রকৃত ফল বলা হয়।
15) ইমাসকুলেশন বলতে কী বোঝায়? একজন উদ্ভিদ প্রজননবিদ কখন এবং কেন এই পদ্ধতিটি ব্যবহার করেন?
উত্তরঃ যে পদ্ধতিতে স্ত্রী জনিতৃ হিসাবে চিহ্নিত উদ্ভিদের উভয়লিঙ্গ ফুলথেকে পরাগযোগের পূর্বেই পুংস্তবকের অপসারণ করা হয় তাকে ইমাসকুলেশন বলা হয়।একলিঙ্গ উদ্ভিদের ক্ষেত্রে ইমাসকুলেশনের প্রয়োজন হয় না। কিন্তু উভয়লিঙ্গ উদ্ভিদে ইমাসকুলেশন প্রক্রিয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
উদ্ভিদ সংকরায়নে স্ব নিষেক প্রতিহত করার জন্য এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। পরবর্তীতে উন্নত বৈশিষ্ট্যের উদ্ভিদের পরাগরেণু দ্বারা পরাগযোগ ঘটিয়ে উচ্চ গুণমানের উদ্ভিদ সৃষ্টি করা হয়।
16) যদি কেউ বৃদ্ধি সহায়ক উপাদান প্রয়োগের মাধ্যমে পার্থেনোকার্পিকে উদ্দীপিত করতে পারে তবে সেক্ষেত্রে তোমরা কোন ফলগুলোকে এর জন্য নির্বাচন করবে এবং কেন?
উত্তরঃ
17) পরাগরেণুর প্রাচীর তৈরিতে ট্যাপেটামের ভূমিকা ব্যাখ্যা কর।
উত্তরঃ
18) অ্যাপোমিক্সিস কী এবং এর গুরুত্ব কী?
উত্তরঃ
1 Comments
Thankyou sir for this big help
ReplyDelete